মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফেরা ২০২৪ এর ১৯শে জুলাই…



গত বছর ১৯ জুলাই আজকের দিনটা ছিল শুক্রবার। সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করার প্রথম দিন । জুম্মার নামাজের পরে তিনটায় প্রেসক্লাবে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। নামাজের পরে আমি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রেসক্লাবের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে বিজয়নগর এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও ছাত্রলীগ – যুবলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার মুখে পড়ি। আমাদেরকে তিনদিক থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়। আমরা কালভার্ট রোডে ঢুকে পাল্টা ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকি। আমাদের সাথে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ- গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ভাই এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন ভাই সাহসী ভূমিকা পালন করেন। আক্রমণের মুখে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের তারা বারবার একত্রিত করেন!
আমি একপর্যায়ে রাবার বুলেট দ্বারা বিদ্ধ হই। আমার সঙ্গে থাকা ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব মিল্লাদ হোসেনের হাতে চাইনিজ রাইফেলের গুলি হাতের একপাশ থেকে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফাহাদের মুখ চাইনিজ রাইফেলের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় ।
একইসময়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক সদস্য ইমরান গুরুতরভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনও পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন আছে। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে। ২৪ সাল শেষ, ২৫ এর ১৯ শে জুলাই চলছে! গত এক বছরেও সে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়নি।
আমি আমরা মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি! আমাদেরই সহযোদ্ধা হয়ে যারা তাদের আপনজন থেকে ঘরে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মায়াভরা মুখে বেরিয়েছিলেন তাদেরই পাঁচজন শহিদ হয়েছেন এইদিন এই একটি ঘটনায়। অত্যন্ত সৌভাগ্যক্রমে সেইদিন আমরা মৃত্যুকে খুব কাছাকাছি দেখেও বেঁচে ফিরেছি।অনেকটা দ্বিতীয় জীবন পাওয়ার মতন। সে জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
যারা আমাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল,স্বপ্ন চুরমার করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল তাদের ক্ষমা নাই…। আমরা যাদের জীবনের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশ পেলাম, তাদের ঋণ স্বীকার করছি এবং জুলাই-শহিদদের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
নাছির উদ্দীন নাছির
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদ