
History could have been different if private university and madrasa students had not taken over the streets: Nasir
১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারকীয় হামলার পরে হল বন্ধ করে হলগুলোতে খাবার, পানি, বিদ্যুৎ বন্ধ করার হুমকি দিয়ে ফ্যাসিস্ট শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়তে বাধ্য করে। তখন আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়।
ওইদিন পরবর্তী কর্মসূচি বিষয়ে সমন্বয়কদের সাথে আমাদের আলোচনার সময়েও কেউ কেউ হতাশা ব্যক্ত করেন আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে। আবার কেউ কেউ আশাবাদী ছিলেন যে আন্দোলন তীব্র হবে। ফাঁকা ক্যাম্পাসে কীভাবে হবে তা নিয়ে শঙ্কা ছিল সবার মনে।
আজ ১৮ জুলাই একটি ঐতিহাসিক দিন। গতবছরের এদিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সবটুকু সামর্থ্য উজার করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশের গুলিতে অনেকজন শহিদ হয়। কিন্তু তারা দমে যাননি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনোবল ফিরে পায়। ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রামপুরা, বাড্ডা, বসুন্ধরা এলাকায় তাদের দুর্বার আন্দোলনের কারণে আন্দোলন ক্যাম্পাস থেকে রাজপথে ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিক ভাইয়েরা যুক্ত হয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনকে গণআন্দোলনে পরিণত করে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হত্যাযজ্ঞের কারণে ঢাকার মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রবল আন্দোলনের কারণেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত হয়।
অন্যদিকে ঢাকার প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে দিয়ে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা সাহসী ভূমিকা পালন করে। শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি মিলেও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের হটাতে পারেনি।
মৃত্যুর মিছিল উপেক্ষা করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ১৮ জুলাই থেকে রাজপথ দখলে না নিলে গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস ভিন্নরকম হতে পারত। সঠিক সময়ে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমাদের বিজয়ের গল্প আরও অনেক বিলম্বিত হতে পারত।